চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামে ম্যালেরিয়ার জীবাণুবাহী মশা মারতে বিদেশ থেকে ৩৮ বছর আগে আনা ৫শ’ টন ক্ষতিকর ডাইক্লোরো ডাফেনাইল ট্রাইক্লোরেথেন (ডিডিটি) পাউডার অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে।
নগরের আগ্রাবাদে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাফ ডিপোতে বছরের পর বছর পড়ে থাকা বিপজ্জনক রাসায়নিক পণ্যগুলো ধ্বংস করতে নেওয়া হবে ফ্রান্সে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দুটি জাহাজে করে ১৭ কনটেইনার পাঠানা হয়েছে। বাকি সাত কনটেইনার জাহাজে তোলা হবে আগামী সপ্তাহে।
ম্যালেরিয়ার জীবাণুবাহী মশা নিধনের জন্য ১৯৮৫ সালে আমদানি করা হয়েছিল ৪৮০ টন ডিডিটি (ডাইক্লোরো ডাফেনাইল ট্রাইক্লোরেথেন) পাউডার। মানুষ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক এই ডিডিটি ১৯৮৯ সালে নিষিদ্ধ করা হয়। তার পর থেকে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ কেন্দ্রীয় ওষুধাগারের গুদামে পড়ে থাকে এই পাউডার।
ডিডিটি পাউডার মানবদেহ ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর রাসায়নিক। প্রায় চার দশক আগে ম্যালেরিয়া মশা নিধন কার্যক্রমের জন্য পাকিস্তান থেকে পণ্যগুলো আনা হয়েছিল। ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আসার পর ৩৭ বছর ধরে অনেকটা অরক্ষিত ও অনিরাপদভাবে নগরের আগ্রাবাদ এলাকায় কেন্দ্রীয় ওষুধাগার গুদামে পড়েছিল এগুলো।
জানা গেছে, গুদাম থেকে ডিডিটি পাউডার অপসারণের পুরো প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত সতর্কতার সাথে প্যাকিং করা হয়। ব্যবহার করা হয়েছে বিদেশ থেকে আনা যন্ত্রপাতি। নিরাপত্তার প্রয়োজনে কয়েক স্তরে ডিডিটি পাউডারগুলো প্যাকেজিং করা হয়। ডিডিটি পাওডার নিরাপদে বাংলাদেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার জটিল প্রক্রিয়াটির দায়িত্বে ছিল জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এবং গ্লোবাল এনভাইরনমেন্ট ফ্যাসিলিটি।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বাংলাদেশে কীটনাশক ঝুঁকি হ্রাস প্রকল্প সিনিয়র টেকনিক্যাল উপদেষ্টা মার্ক ডেভিস বলেন, এই জায়গা থেকে ডিডিটি পাউডার অপসারণ করার আগে আমাদের নতুন কনটেইনারে সবকিছু পুনরায় প্যাকেজিং করতে হচ্ছে। এ জন্য বাংলাদেশের বাইরে থেকে কনটেইনার আনতে হচ্ছে। যা ইউএনএ অনুমোদিত এবং এই নতুন কনটেইনারেই প্যাকেজিং করছি। পাউডারগুলো শুধু পরিবেশের জন্য নয়, মাননবদেহের জন্যও ক্ষতিকারক। আগামী সপ্তাহে সাত কনটেইনারে করে ডিডিটি পাউডার নিয়ে ফ্রান্সের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে যাবে জাহাজ। কাজটি অত্যন্ত জটিল। বেশ সতর্কতার সথে ক্ষতিকর এ পণ্যগুলো চট্টগ্রাম বন্দরে নেয়া হচ্ছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক বলেন, ৩৭ বছর পর মানবদেহ ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর ডিডিটি পাওডারমুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। এ বছরের শুরুতে সরকারের একাাধিক সংস্থা এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার সমন্বয়ে ডিডিটি অপসারণ কার্যক্রম শুরু হয়। আগামী সপ্তাহে সাত কনটেইনার ভর্তি জাহাজ ফ্রান্সের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে গেলে পুরো প্রক্রিয়াটি সফলভাবে শেষ হবে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।